,

থ্যালাসেমিয়া ট্র্যাকার ও প্রথম দোভাষী মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন উদ্বোধন

নিজস্ব প্রতিবেদক :  দেশব্যাপী থ্যালাসেমিয়া রোগীদের সাহায্য ও কল্যাণার্থে তৈরি করা হয়েছে থ্যালাসেমিয়া ট্র্যাকার এবং প্রথম দোভাষী মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ‘এ টু জেড থ্যালাসেমিয়া’। এর মাধ্যমে সহজেই দেশের সকল থ্যালাসেমিয়া রোগী চিহ্নিত করে দ্রুত প্রয়োজনীয় সেবা এবং চিকিৎসা প্রদান করা সম্ভব হবে। মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে সহজেই থ্যালাসেমিয়া সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য সকলের হাতের মুঠোয় চলে আসবে।

রাজধানীর বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ানস (বিসিপিএস) অডিটোরিয়ামে চার দিনব্যাপী ‘আন্তর্জাতিক থ্যালাসেমিয়া কর্মশালা ২০১৯’ এর সমাপনী অনুষ্ঠানে বৃহস্পতিবার এই মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনের উদ্বোধন করা হয়ছে। আমন্ত্রিত অতিথিরা এটি উদ্বোধন করেন।

৪র্থ স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি সেক্টর কর্মসূচির আওতায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বাস্তবায়নাধীন নন-কমিউনিকেবল ডিজিজ কন্ট্রোল অপারেশনাল প্ল্যানের থ্যালাসেমিয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ কম্পোনেন্ট।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নন-কমিউনিকেবল ডিজিজ কন্ট্রোল (এনসিডিসি) প্রোগ্রামের উদ্যোগে এবং আন্তর্জাতিক থ্যালাসেমিয়া ফেডারেশন সহযোগিতায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট) অধ্যাপক ডা. এ এইচ এম এনায়েত হোসেন।

উদ্বোধনী বক্তব্য দেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লাইন ডিরেক্টর (এনসিডিসি) ডা. নূর মোহাম্মদ। ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার (এনসিডিসি) ডা. মোস্তাফিজুর রহমান বাংলাদেশে থ্যালাসেমিয়া প্রতিরোধের অগ্রযাত্রা সংক্ষিপ্ত আকারে তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানে বিদেশী অতিথিদের মধ্যে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন ক্লিনিক্যাল ডিরেক্টর এনএইচ ফাউন্ডেশনের অধ্যাপক এন ডাল্টন, ইন্টারন্যাশনাল থ্যালাসেমিয়া ফাউন্ডেশনের প্রতিনিধি ড. পল টেলফার, এনএইচ ফাউন্ডেশনের মেরি পেট্রো। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিএমডিসির সভাপতি অধ্যাপক ডা. হাবিবুল্লাহ।

তিনি বলেন ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় আগামী ২০২৮ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে থ্যালাসেমিয়ামুক্ত করার ঘোষণার বাস্তব রূপ দান করতেই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় থ্যালাসেমিয়ামুক্ত বাংলাদেশ গড়তে সরকারসহ বিভিন্ন সংগঠনকে সাথে নিয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এমন আয়োজনের ধারাবাহিকতা রক্ষা করা প্রয়োজন।’

তিনি আগত সকল ডাক্তারদের প্রতি থ্যালাসেমিয়া রোগীদের সর্বোচ্চ চিকিৎসাসেবা প্রদানের আহ্বান জানান।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট) ও অনুষ্ঠানের সভাপতি অধ্যাপক ডা. এ এইচ এম এনায়েত হোসেন বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, থ্যালাসেমিয়া রোগীর সংখ্যা বাংলাদেশে দিন দিন বাড়ছে। এ রোগ নির্মূলে তাই সকলকে একযোগে কাজ করতে হবে।

উল্লেখ্য, থ্যালাসেমিয়া একটি জন্মগত রক্তস্বল্পতাজনিত বংশগত রোগ। পিতা-মাতা উভয়েই এ রোগের বাহক হলে সন্তান থ্যালাসেমিয়া রোগী হয়ে জন্মাতে পারে। বাংলাদেশে প্রায় শতকরা ১০ ভাগ লোক এ রোগের বাহক, যা আমাদের দেশের জন্য মারাত্মক হুমকি। আমাদের দেশে প্রতিবছর প্রায় ১২ হাজার শিশু এ রোগ নিয়ে জন্মগ্রহণ করছে। এ রোগীদের অপরের রক্ত গ্রহণ করে বেঁচে থাকতে হয়। একজন রোগীর গড়ে প্রতি মাসে দুই থেকে তিন ব্যাগ রক্ত প্রয়োজন। রক্তদাতার অভাবে বেশিরভাগ রোগী প্রতিনিয়ত মৃত্যুবরণ করছে। বয়সভেদে একজন রোগীর চিকিৎসার জন্য ৫ হাজার থেকে ২৫ হাজার টাকা খরচ হয়ে থাকে, যার ব্যয়ভার বেশিরভাগ পিতামাতা বহন করে পারেন না।

এই বিভাগের আরও খবর